তুলসী বা পবিত্র তুলসী হল Lamiaceae পরিবারের একটি বহুল পরিচিত ভেষজ। এটি ভারতের স্থানীয় এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া জুড়ে ব্যাপকভাবে চাষ করা হয়। ভারতে ও অন্যান্য দেশে তুলসী কে আবার ধার্মিক পরিপ্রেক্ষিতে দেখা হয়ে থাকে।
ভারতে হিন্দুদের আবাসস্থলের পাশাপাশি আয়ুর্বেদে তুলসীর একটি বিশেষ স্থান রয়েছে। এটি হিন্দুদের দ্বারা পবিত্র বলে বিবেচিত এবং হিন্দুরা তুলসী কে দেবী হিসেবেও পুজো করে থাকেন।
আসুন জেনে নেওয়া যাক তুলসীর গুণাগুণ সম্পর্কে।
তুলসীর পাতাতে মুলত ভিটামিন এ এবং ভিটামিন সি প্রচুর প্রিমানে থাকে। এছাড়াও ভিটামিন কে প্রচুর পরিমাণে থাকে। খনিজ যেমন ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাস, আয়রন এবং পটাসিয়াম থাকে যথেষ্ট পরিমাণে।
১। প্রাকৃতিক ইমিউনিটি বুস্টার – তুলসী ভিটামিন সি এবং জিঙ্ক সমৃদ্ধ। এইভাবে এটি একটি প্রাকৃতিক অনাক্রম্যতা বৃদ্ধিকারী হিসাবে কাজ করে এবং বিভিন্ন সংক্রমণ থেকে দূরে রাখে। এতে রয়েছে প্রচুর অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল, অ্যান্টি-ভাইরাল এবং অ্যান্টি-ফাঙ্গাল বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা আমাদের বিভিন্ন সংক্রমণ থেকে রক্ষা করে।
আরও পড়ুন: ২৫ ডিসেম্বর দিনটি তুলসী দিবস হিসেবে পালিত হয়
২। জ্বর কমায় এবং বেদনানাশক – তুলসীতে অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টি-ভাইরাল বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করে, এইভাবে জ্বর কমায়।
৩। ঠান্ডা, কাশি এবং অন্যান্য শ্বাসযন্ত্রের ব্যাধি হ্রাস করে – তুলসীতে উপস্থিত ক্যামফিন, সিনিওল এবং ইউজেনল বুকের ঠান্ডা ও কনজেশন কমাতে সাহায্য করে।তুলসী পাতার রস, মধু ও আদার সাথে মিশিয়ে খেলে ব্রঙ্কাইটিস, হাঁপানি, ইনফ্লুয়েঞ্জা, কাশি ও সর্দি-কাশিতে কার্যকরী।
৪। স্ট্রেস এবং রক্তচাপ কমায় – তুলসির অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি বৈশিষ্ট্য প্রদাহ এবং রক্তচাপ কমায়।
৫। অ্যান্টি-ক্যান্সার বৈশিষ্ট্য – তুলসীতে উপস্থিত ফাইটোকেমিক্যালের শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্য রয়েছে। এইভাবে, তারা আমাদের ত্বক, লিভার, মৌখিক এবং ফুসফুসের ক্যান্সার থেকে রক্ষা করতে সহায়তা করে।
৬। হার্টের স্বাস্থ্যের জন্য ভালো – রক্তের লিপিড কন্টেন্ট কমিয়ে, ইস্কেমিয়া এবং স্ট্রোক দমন, উচ্চ রক্তচাপ কমাতে এবং উচ্চতর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্যের কারণে কার্ডিওভাসকুলার রোগের চিকিৎসা ও প্রতিরোধে তুলসীর গভীর প্রভাব রয়েছে।
৭। ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ভালো – তুলসী পাতার নির্যাস টাইপ 2 ডায়াবেটিস রোগীদের রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে।
৮। কিডনিতে পাথর এবং গাউটি আর্থ্রাইটিসে উপকারী – তুলসি শরীরকে ডিটক্সিফাই করে এবং তুলসীতে মূত্রবর্ধক বৈশিষ্ট্য রয়েছে। এটি শরীরে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা কমায়, যা কিডনিতে পাথর হওয়ার প্রধান কারণ।