সংবাদ সংস্থা, চন্ডিগড়: ফের কৃষক আন্দোলনের (Farmer’s protest) উত্তপ্ত হচ্ছে দেশের রাজনীতি। কয়েক দিন ধরেই হরিয়ানায় (Hariyana) একটু একটু করেই গরম পরিস্থিতি। শনিবার হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী মনোহরলাল খট্টরের এক সভায় প্রতিবাদ দেখাতে চেয়েছিলেন কৃষকরা। সেই বিক্ষোভ সরাতে গিয়ে পুলিশের লাঠিতে কয়েক জন কৃষক রক্তাক্ত হন বলে অভিযোগ। এমনকি তার জেরে এক কৃষকের মৃত্যু হয় বলে দাবি উঠেছে। ঘটনার নিন্দা করেছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী এবং পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ক্যাপ্টেন অমরিন্দর সিং।
শনিবার হরিয়ানার কারনালে এক হোটেলের সামনে সভা ছিল বিজেপি শাসিত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মনোহরলাল খট্টরের। সেই সভাস্থল থেকে বেশ কয়েক কিলোমিটার দূরে আটকে দেওয়া হয় বিক্ষোভকারী কৃষকদের। বাধা পায়ে তাঁরা একটি টোলপ্লাজায় কালো পতাকা নিয়ে অপেক্ষা করছিলে। কিন্তু পুলিশ সেই বিক্ষোভ সরাতে গিয়ে লাঠি চালায় বলে অভিযোগ।
ওই টোলপ্লাজায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণর করতে উপস্থিত ছিলেন আইএএস অফিসার, কারনালের মহকুমা শাসক আয়ুষ সিনহা। তাঁর পুলিশ কর্মীদের নির্দেশ দেওয়ার ভিডিও ভাইরাল হয়ে গিয়েছে। সেখানে তাঁকে বলতে শোনা যাচ্ছে, ‘কোনও বিক্ষোভকরী যেন তাঁর কাছে পৌঁছতে না পারেন’। সবাইকে ধরে ধরে পেটাতে নির্দেশ দিচ্ছেন তিনি। তিনি বলছেন, ‘আপনাদের সকলকে একটা জিনিস স্পষ্ট করে বলছি। যে কৃষকরা নিরাপত্তা বেষ্টনী ভেঙে এগোনোর চেষ্টা করবেন, তিনি যত বড় নেতাই হোন না কেন তাঁকে কোনও ভাবেই ছাড় দেয়া যাবে না’।
পুলিশের লাঠির ঘায়ে অন্তত ১০ জন কৃষক নেতা গুরুতর আহত হয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। আহতদের মধ্যে বছর পঁয়তাল্লিশের সুশীল নামের এক কৃষক নেতার গভীর রাতে মৃত্যু হয় বলে দাবি করা হয়। এদিকে সোশ্যাল মিডিয়ায় দেখা যায়, কৃষকদের রক্তাক্ত ছবি। রক্তে জামাকাপড় ভিজে গিয়েছে। সেই ছবি ছড়িয়ে পড়তেই ফের নতুন করে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে হরিয়ানা। জায়গায় জায়গায় শুরু হয় জাতীয় সড়ক অরবোধ।
পরে নিহত কৃষক নেতার পরিবারের তরফে জানানো হয়েছে, টোলপ্লাজাতে পুলিশের লাঠিচার্জের সময় আহত হন তিনি। এবং তার জেরেই গভীর রাতে মারা যান। যদিও এই অভিযোগ কারনালের পুলিশ অস্বীকার করেছেন। জেলা পুলিশ সুপার গঙ্গা রাম পুনিয়া বলেন, “সুশীল স্থিতিশীল অবস্থায় বাড়িতে গিয়েছিলেন। এবং ঘুমের মধ্যে হার্ট অ্যাটাকে মারা যান।”
বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলেছেন কৃষক নেতা রাকেশ টিকাইতও। পুলিশের এই ‘নক্কারজনক’ ঘটনার নিন্দা করেন। প্রতিবাদে আঁচ ছড়িয়ে পড়ে পাঞ্জাবেও। রবিবার সারাদিন পাঞ্জাবের বিভিন্ন জাতীয় সড়ক অবরোধ করে কৃষকরা প্রতিবাদ জানান। বন্ধ করে দেয়া হয় পাঞ্জাবের বেশ কিছু রাস্তা। এছাড়াও কারনালের মহকুমা শাসককে বরখাস্তের দাবি করা হয় বিভিন্ন প্রতিবাদ সভা থেকে। হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রীর তীব্র সমালোচনা শুরু হয়েছে।




