নিজস্ব সংবাদদাতা, ঘাটাল: সরকারি সুযোগ সুবিধা পাওয়া না পাওয়া নিয়ে একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়তেই বিতর্ক শুরু হয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটাল (Ghatal) বিধানসভার রাজনগর গ্রামপঞ্চায়েত এলাকায়। ভিডিওতে ঘাটালের বিধায়কের সামনে একজন দাবি করছেন, বিজেপি (BJP) করার ‘অপরাধে’ তাঁদের ১০০ দিনের কাজ, বার্ধক্য ভাতার মতো সুযোগ থেকে ব্রাত্য রাখা হয়েছে। যদিও নির্দিষ্ট তথ্য দিয়ে সেই অভিযোগ উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে তৃণমূল (TMC) পরিচালিত স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধানের তরফে।
সম্প্রতি নিজের বিধানসভা এলাকায় ত্রাণ বিলি করতে গিয়েছিলেন ঘাটালের বিজেপি বিধায়ক শীতল কপাট। তাঁর সামনেই এক ব্যক্তি অভিযোগ করেন, বিজেপি সমর্থক হওয়ায় তাঁরা ৫ বছর ধরে জবকার্ড (১০০ দিনের কাজ) বা অন্যান্য সরকারি সুযোগ সুবিধা এমনকি ত্রাণ পর্যন্ত পাচ্ছেন না। বার্ধক্য ভাতায় তাঁর পরে অনেকে অবেদন করে পেয়ে গেলেও তিনি পাননি। আবাস যোজনায় নাম এলেও তা কেটে দেওয়া হয়। তাঁর সেই অভিযোগ ধরা পড়ে উপস্থিত কারও ক্যামেরায়। পরে যেটি সংবাদমাধ্যমের হাতে পৌঁছয়।
বিধায়কের সামনে অভিযোগ করা ওই ব্যক্তির ঘাটাল বিধানসভা এলাকায় রাজনগর গ্রামপঞ্চায়েত এলাকার রামদেবপুর গ্রামের বাসিন্দা। নাম অরুণ গোস্বামী, পিতা স্বর্গীয় অনিল গোস্বামী। এই ভিডিও প্রকাশ্যে আসার পর বিজেপি বিধায়কও একই অভিযোগ করেছেন। তাঁর দাবি দীর্ঘ দিন ধরেই এই দুর্নীতি চলছে সেখানে।
খবর ও বিজ্ঞাপনের জন্য় WhatsApp করুন 9836454545 নম্বরে
এবং
সব খবরের আপডেট পেতে লাইক করুন আমাদের ফেসবুক পেজ
এই অভিযোগ নিয়ে কৃষিজীবী সমাচারের তরফে যোগাযোগ করা হয় রাজনগর গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান অরুণ দোলইয়ের সঙ্গে। অভিযোগের উত্তরে তাঁর তরফে দাবি করা হয়, ওই ব্যক্তি মিথ্যা বলছেন। যে কেউ অভিযোগকারী অরুণ গোস্বামীর বাড়িতে গিয়ে খতিয়ে দেখতে পারেন। অভিযোগকারী অরুণ গোস্বামীর দোতলা পাকাবাড়ি রয়েছে, ফলে আবাস যোজানার সুবিধা পাওয়ার কথা নয়, তাই পাননিও।
আরও জানানো হয়, অরুণ গোস্বামীর বয়স এখনও ৬০ হয়নি। তাই স্বাভাবিক ভাবেই বার্ধক্য ভাতায় নাম ওঠেনি। এমনকি যে প্রকল্পে তিনি সরকারি সুযোগ সুবিধা পেতে পারতেন, বার বার বলা সত্ত্বেও অরুণ গোস্বামী সেই প্রকল্পের জন্য আবেদন করেননি। উল্টে তৃণমূল কংগ্রেস পরিচালিত পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে অভিযোগ করছেন। আর তাঁর ছেলের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ডিটেসল দেখলেই বোঝা যাবে তাঁরা ১০০ দিনের কাজ পাচ্ছেন কিনা। পঞ্চায়েত প্রধানের তরফে আরও দাবি করা হয়েছে অরুণ গোস্বামী যা অভিযোগ করছেন তার কোনও সারবত্তা নেই।
‘দিদির উপর ভরসা করলে কপালে তালিবানের গুলি আছে’, ফের বিতর্কিত মন্তব্য দিলীপের
পঞ্চায়েত প্রধানের তরফে জানানো হয়েছে, এলাকা উন্নয়ন হোক বা ত্রাণ যেখানে যেমন প্রয়োজন সেই মতো তা এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। কোনও রাজনৈতিক রং দেখা হয়নি সে ক্ষেত্রে। এলাকার মানুষই সে কথা বলবেন। শুধু তাই নয় যে অরুণ গোস্বামী দাবি করছেন সরকারি সুযোগ সুবিধা পাচ্ছেন না। তাহলে তিনি পানীয় জলের সুবিধা পাচ্ছেন কী করে। কারণ যেখানে প্রকল্পের শেষ সীমা তার থেকে অন্তত ৫০০ মিটার দূরে অরুণ গোস্বামীর বাড়ি। পঞ্চায়েত প্রধান নিজের উদ্যোগে অরুণ গোস্বামীর বাড়িতে জলের পাইপ লাইন পৌঁছে দিয়েছেন। সেখানে তো রাজনৈতিক রং দেখা হয়নি। তাহলে উনি কী ভাবে এই অভিযোগ করছেন?
নাবালিকাকে ফুসলিয়ে নিয়ে গিয়ে লুকিয়ে রাখার অভিযোগ, ঘাটালে থানায় এফআইআর দায়ের
বিধায়কের অভিযোগে উত্তরে পাল্টা অনুযোগ করেছেন এলাকার কিছু মানুষ। বিদেশ গোস্বামী দাবি করেন, যে দিন বিধায়ক এসেছিলেন তাঁরা আশা করেছিলেন তাঁদের সঙ্গেও কথা বলবেন। কিন্তু বিধায়ক নির্দিষ্ট ৪ থেকে ৫টি পরিবারের সঙ্গে কথা বলে ফিরে যান। ফলে যে ভিডিওর কথা বলা হচ্ছে এবং তাতে যে অভিযোগ তোলা হয়েছে তা সত্যি নয়।