তরমুজকে গ্রীষ্মকালের একটি বেশ জনপ্রিয় ফল বলা যায়। তরমুজের প্রায় ১০০০ রকমের ধরন বা প্রজাতি রয়েছে। তরমুজ উৎপাদন সবচেয়ে বেশি হয় চায়নাতে, তারপর তুর্কি ও তৃতীয় স্থানে রয়েছে ভারত।
কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন, ফ্যাট খুবই অল্প পরিমানে রয়েছে এই তরমুজে। এছাড়া রয়েছে ভিটামিন A, ভিটামিন B1, ভিটামিন B2, ভিটামিন B3, ভিটামিন B5, ভিটামিন B6, কোলিন, ভিটামিন C।
মিনারেল এর মধ্যে রয়েছে ক্যালসিয়াম, আয়রণ, ম্যাগনেসিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ, ফসফরাস, পটাসিয়াম, সোডিয়াম ও জিঙ্ক। এছাড়া রয়েছে প্রচুর পরিমানে জল ও লাইকোপিন নামক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট।
আসুন জেনে নেওয়া যাক কোন কোন রোগের ক্ষেত্রে কাজে লাগে এই তরমুজ।
তরমুজ এর স্বাস্থ্য উপকারিতা
শরীরে জলের যোগান দিতে – তরমুজে রয়েছে প্রায় 92 শতাংশ জল। গরম কালে শরীর থেকে ঘাম ও অন্যান্য কারনে জল খুব তাড়াতাড়ি নির্গত হয়। শরীরে সেই জলের অভাব পূরণে তরমুজ বেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।
রক্ত শর্করার পরিমান বজায় রাখতে – তরমুজ রক্তে শর্করার পরিমান বজায় রাখতে সাহায্য করে। তরমুজ L সাইট্রুলিন কে L আর্জিনিন এ রূপান্তরিত করতে সাহায্য করে। বলা বাহুল্য এই দুই আমিনো অ্যাসিড ডায়াবেটিস রুখতে সাহায্য করে। তাই পরিমিত পরিমানে তরমুজ খেলে ডায়াবেটিস হওয়ার সম্ভাবনা কমে।
ওজন কামতে সাহায্য করে – ওজন কমাতে তরমুজ এর জুড়ি মেলা ভার। তরমুজে প্রচুর পরিমানে জল থাকার কারনে তরমুজ খাওয়ার পর পেট ভর্তি রয়েছে মনে হয়। তাই অতিরিক্ত খাবার খাওয়া থেকেও রেহাই মেলে। সে কারনে তরমুজ ওজন কমাতে বেশ উপকারী বলা যায়।
হার্টের স্বাস্থ্য ভাল রাখতে – তরমুজ হার্টের স্বাস্থ্য ভাল রাখতে সাহায্য করে। তরমুজে লাইকোপিন নামক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে। এই লাইকোপিন কোলেস্টেরল এর পরিমান নিয়ন্ত্রণে রাখে।
যার কারনে হার্টের সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। যাদের হার্টের সমস্যা বা মূলত কোলেস্টেরল এর সমস্যা রয়েছে তারা দৈনন্দিন খাদ্য তালিকায় তরমুজ রাখতে পারেন।
হাঁপানি সারাতে – তরমুজে রয়েছে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন C, যার কারনে তরমুজ হাঁপানি সারাতে বেশ উপযোগী। তাই যাদের হাঁপানির সমস্যা রয়েছে তারা প্রতিদিনের খাবারে তরমুজ রাখতে পারেন।
নার্ভের সক্রিয়তা বজায় রাখতে – নার্ভের সক্রিয়তা বজায় রাখতে তরমুজ বেশ উপকারী। তরমুজে উপস্থিত পটাসিয়াম নার্ভ কে সক্রিয় রাখে ও ঠিক ভাবে কাজ করতে সাহায্য করে।
হিট স্ট্রোক নিয়ন্ত্রণে – তরমুজে প্রচুর পরিমানে জল ও ইলেকট্রলাইট থাকায় এই হিট স্ট্রোক থেকে দূরে রাখে। এছাড়া শরীরও জলের পরিমান বজায় রাখতে পারে। তাই বিশেষ করে গরম কালে হিট স্ট্রোক এড়াতে তরমুজ বেশ গুরুত্বপূর্ণ।
ক্যান্সার এর ঝুঁকি কমাতে – সদ্য প্রকাশিত কিছু স্টাডিতে দেখা গেছে যে তরমুজ এ উপস্থিত ভিটামিন C ও লাইকোপিন নামক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরের অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমাতে সাহায্য করে এবং ক্যান্সার এর ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।
ত্বক ভাল রাখতে – ত্বকের যত্নে তরমুজ বেশ উপকারী। ভিটামিন C কোলাজেন উৎপন্ন করে। এই কোলাজেন কোষ গঠনে বেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। এর ফলে ত্বক উজ্জ্বল হয় এবং ত্বকের স্বাস্থ্য বজায় থাকে।