সমবায় বাঁচাও মঞ্চের ডাকে বিশাল জমায়েত, মহিলাদের উপচে পড়া ভিড়  

Share with Friends

নিজস্ব সংবাদদাতা, দাসপুর: বড়সড় জমায়েতের মধ্যে দিয়ে পশ্চিমবঙ্গ সমবায় বাঁচাও মঞ্চের দাসপুর ১ ও ২ ব্লক কমিটির উদ্যোগে পালিত হল ৭০ তম নিখিল ভারত সমবায় সপ্তাহ। ২০ নভেম্বর, সোমবার  দাসপুরের সুলতাননগর প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন মাঠে রাসবিহারী দাস মঞ্চে এই আয়োজন করা হয়।

দাসপুর ব্লকের সুলতাননগর জ্যোৎগৌরাঙ্গ সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতি লিমিটেডের পরিচালন সমিতির নির্বাচন হয়নি প্রায় ৪ বছর ধরে। বসিয়ে রাখা হয়েছে প্রশাসক কমিটি। যার মাথায় স্বাভাবিক ভাবেই রয়েছেন শাসক দলের নেতা। নানান অনিয়ম, নিয়োগ দুর্নীতি-সহ একাধিক অভিযোগে বার বার খবরের শিরনামে উঠে এসেছে এই সমাবায় সমিতি। এই পরিস্থিতিতে পঞ্চায়েত ভোটের পর পরই এবং আগামী লোকসভা নির্বাচনের আগে এমন বিশাল জমায়েতকে তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে স্থানীয় রাজনৈতিক মহল।

এদিনের সমাবেশ মঞ্চে ছিলেন নাবার্ড কর্মচারি ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক রানা মিত্র, সমবায় বাঁচাও মঞ্চের জেলা সম্পাদক গণেশ সামন্ত, সমবায় বাঁচাও মঞ্চের রাজ্য কমিটির সহসভাপতি বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য, বিশিষ্ঠ সমবায়ী তথা দাসপুরের প্রাক্তন বিধায়ক সুনীল অধিকারি, সমবায়ী তরুণ ভট্টাচার্য্য-সহ প্রমুখ।

রানা মিত্র অভিযোগ করেন, কী ভাবে দুর্নীতি এই রাজ্যে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পেয়েছে। যার কোপ থেকে রেহাই পায়নি গরিবের টাকা জমা রাখা সমবায় সমিতিগুলিও। কিন্তু প্রশাসন নির্বিকার। ফলে সব সঞ্চয় হারানোর ভয়ে আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ থেকে মধ্যবিত্তরা। নির্বাচন বন্ধ রেখে প্রশাসক বসিয়ে কার্যত সমবায় সমিতিগুলির মাধ্যমে গরিবের টাকা লুটপাট চালানো হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন রানা মিত্র।

গণেশ সামন্ত তাঁর বক্তব্যে তুলে ধরেন, গরিব খেটে খাওয়া মানুষ, প্রান্তিক কৃষকদের মহাজনি কারবারের খপ্পর থেকে বার করে আনতে বাম আমলে যে সমবায় ব্যবস্থার বিকাশ ও বিস্তার হয়েছিল, বর্তমান সরকারের আমলে তা ধ্বংসের মুখে। ফলে প্রতিদিন সংকটের মুখে পড়ছেন সাধারণ মানুষ। ঘুর পথে মাইক্রোফিন্যান্সের মতো ব্যবস্থা আরও জাঁকিয়ে বসছে।

অন্যান্য বক্তারাও একের পর এক তথ্য তুলে ধরে উল্লেখ করেন, সমবায়গুলির জমা টাকা কী ভাবে লুঠ হয়ে যাচ্ছে। বছরের পর বছর তার কোনও অডিট, হিসাব কিছুই হয় না। আর প্রশাসন নির্বিকার, অভিযোগ জানিয়েও কোনও কাজ হচ্ছে না।

চন্দ্রকোনা ১ নম্বর ব্লকের শ্রীনগর ঠাকুরহাটি সমবায় সমিতিতে সাড়ে ৪ কোটি টাকা এই পদ্ধিতিতে লুট হওয়ার ফলে সাড়ে পাঁচ হাজার গরিব মানুষ আজ বিপদের মুখে। ব্লক, মহকুমা শাসকের দফতরে অভিযোগ জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি। ডেবরা ব্লকের পাটনা সমবায় সমিতিতেও তিন কোটি টাকার বেশি লুট হয়ে গিয়েছে। ক্ষীরপাইয়ের মানিককুণ্ডু সমবায়ে প্রায় ২৭ কোটি টাকার কোনও হিসাব নেই। আড়াই বছর সেই সমবায়ে তালা দেওয়া। ফলে হাজার হাজার মানুষ পথে বসতে বসেছেন।

সুলতাননগরের সমাবেশ এদিন মহিলাদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। সম্মেলন থেকে আওয়াজ ওঠে অবিলম্বে সুলতাননগর সমবায় সমিতি-সহ সব সমবায়ে নির্বাচন করাতে হবে। না হলে আগামী দিনে বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে উঠবে গোটা জেলা জুড়েই।


Share with Friends

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *