ব্যুরো রিপোর্ট: ‘এক দেশ এক ভোট’-এর (One nation one election) তীব্র বিরোধিতা করল সিপিআই (এম) CPI M)। মঙ্গলবার দিল্লিতে প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের নেতৃত্বে তৈরি কমিটিতে আলোচনার জন্য অন্যান্য দলের সঙ্গে ডাকা হয় সিপিআই(এম)কেও। এর আগেও প্রকাশ্যে দলের তরফ থেকে যে অবস্থান নেওয়া হয়েছিল, এদিন বৈঠকেও তা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে লিখিত আকারে।
পার্টির তরফে একাধিক প্রশ্ন তোলা হয় এই ‘এক দেশ এক ভোট’ ধারণা নিয়ে। তারও কোনও উত্তর দিতে পারেনি রামনাথ কোবিন্দ কমিটি। সিপিআই (এম)এর তরফে বলা হয়, এক দেশ এক ভোট দেশের সংবিধানের মর্মবস্তুর বিরোধী। অগণতান্ত্রিক এবং যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর বিরোধী। এদিন কমিটির বৈঠকে যান সিপিআই(এম) সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি, পলিট ব্যুরো সদস্য নীলোৎপল বসু এবং কেন্দ্রীয় সম্পাদকমণ্ডলী সদস্য মুরলীধরণ।
সীতারাম ইয়েচুরি বলেন, আসলে এই বৈঠকের আগেই ধরেই নেওয়া হচ্ছে ‘এক দেশ এক ভোট’ বিষয়টি সম্ভব। এবং তা ধরেই কেবল কী ভাবে তা কার্যকর করা যায় তা জানতেই এই বৈঠক ডাকা হয়েছিল। কারণ কমিটিই গঠন করা হয়েছে বোঝাপড়ার ভিত্তিতে। আমরা তার বিরুদ্ধে, কারণ এই ‘এক দেশ এক ভোট’ ধারণাটিই ভুল।
ইয়েচুরি বলেন, ‘এক দেশ এক ভোট’ ধারণা আমাদের সংবিধান ও যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর বিরোধী। একে কার্যকর করতে হলে হয় কোনও রাজ্যের বিধানসভার মেয়াদ কমাতে বা বাড়াতে হবে। দু’টিই অগণতান্ত্রিক। মানুষ পূর্ণ মেয়াদের জন্যই সরকার নির্বাচন করেন।
আবার এমন যদি দেখা যায় কোনও সরকার সংখ্যা গরিষ্ঠতা ধরে রাখতে পারল না। সে ক্ষেত্রে এক দেশ এক ভোট নীতিতে সেই সরকারকেই অগণতান্ত্রিক ভাবে সরকার চালাতে হবে। অথবা কেন্দ্রের হাতে সেই রাজ্যের শাসন ক্ষমতা চলে যাবে। যার দুটিই অগণাতান্ত্রিক।
স্বাধীনতার পর ১৯৫২ এবং ১৯৫৭ সালে এক সঙ্গে লোকসভা এবং গোটা দেশে বিধানসভা নির্বাচন হয়। কিন্তু তার পর বিভিন্ন রাজ্যে ৩৫৬ ধারা প্রয়োগ করে সরকার ভেঙে দেওয়া হয়। তার ফলে আর কোনও দিনই এক সঙ্গে লোকসভা এবং বিধানসভা ভোট হয়নি।
রামনাথ কোবিন্দ কমিটিকে সীতারাম ইয়েচুরিরা প্রশ্ন করেন, এ ক্ষেত্রে সংবিধানের ৩৫৬ ধারা বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে কিনা। রামনাথ কোবিন্দের এই কমিটি এ প্রশ্নের কোনও উত্তর দিতে পারেনি। তার পরই সীতারাম ইয়েচুরি প্রশ্ন রাখেন, তাহলে রাজ্য এবং কেন্দ্রের ভোট এক সঙ্গে হবে কী ভাবে?