আচমকা স্থগিত নির্বাচন, ক্ষোভে ফেটে পড়লেন মানুষ, বিক্ষোভ অবরোধ!

Share with Friends

নিজস্ব সংবাদদাতা, দাসপুর: পশ্চিম মেদিনীপুরের দাসপুরে (Daspur) সুলতাননগর জ্যোৎগৌরাঙ্গ সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতি লিমিটেডের পরিচালন কমিটির প্রতিনিধি নির্বাচন (Election) স্থগিত হয়ে গেল রবিবার। এর আগে দীর্ঘ টালবাহানার পর নোটিফিকেশন জারি করে জানানো হয়েছিল, ১৭ মার্চ ২০২৪, রবিবার সকাল ৯টায় ভোট গ্রহণ হবে।। কিন্তু রবিবার সকালে ভোট গ্রহণ মাত্র ২ ঘণ্টা আগে জানিয়ে দেওয়া হয় নির্বাচন আপাতত স্থগিত।

এই ঘটনা সামনে আসতেই গোটা এলাকায় ক্ষোভ জমতে থাকে প্রশাসনের বিরুদ্ধে। আচমকা, সঙ্গত কারণ ছাড়াই ভোট কেন স্থগিত করা হল, এই প্রশ্ন তুলে বিক্ষোভ শুরু করেন সমিতির ভোটার এবং সমবায় বাঁচাও মঞ্চ। ভোটারদের বিক্ষোভে সমবায় সংলগ্ন ঘাটাল-পাঁশকুড়া রাস্তা অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। শেষ পর্যন্ত অবরোধ তুলতে নামাতে হয় বিশাল পুলিশ বাহিনী। প্রায় ঘণ্টাখানেক পর পুলিশের মধ্যস্থতায় অবরোধ উঠে যায়।

সমবায় বাঁচাও মঞ্চের নেতাদের অভিযোগ, হেরে যাওয়ার ভয়ে প্রশাসনকে ব্যবহার করে ভোট গ্রহণের মাত্র ২ ঘণ্টা আগে নির্বাচন আটকে দিল তৃণমূল। রাজ্যে যে ভাবে স্কুল কলেজ ইউনিভার্সিটির নির্বাচন বন্ধ রেখেছে এই সরকার, একই ভাবে সমবায় সমিতিগুলিও চালাতে চাইছে। তার ফলে দুর্নীতি, আর্থিক তছরুপের ধাক্কায় একের পর এক সমবায়ে তালা পড়ে যাচ্ছে। মানুষের সঞ্চিত অর্থ লুঠ হয়ে যাচ্ছে।

এই অবস্থায় কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করে সুলতাননগর সমবায় সমিতির নির্বাচন আদায় করেছিল সমবায় বাঁচাও মঞ্চ। মঞ্চের দাবি ছিল, বোর্ড যেই পরিচালনা করুক তা নিয়ম মেনে ভোটের দ্বারা নির্বাচিত হোক। কিন্তু সুলতাননগর সমবায় সমিতির নির্বাচনের প্রক্রিয়া শুরু হতেই  তৃণমূল নেতারা বুঝতে পারছিলেন, মানুষের ভোটে তাদের জেতার কোনও সম্ভাবনা নেই। তাই শেষ পর্যন্ত লোকসভা ভোটের আদর্শ নির্বাচনী আচরণবিধির বাহানা খাড়া করে এই নির্বাচন আটকে দেওয়া হল।

সমবায় বাঁচাও মঞ্চের তরফে দাবি করা হয়, লোকসভা ভোটের আগে এত গুরুত্বপূর্ণ একটি সমবায় সমিতির নির্বাচনে হার নিশ্চিত জেনেই গিয়েছিল তৃণমূল। লোকসভা ভোটের আগে সমবায় সমিতির নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশিত হলে এলাকায় তৃণমূলের ভোট ব্যাঙ্কে বিশাল প্রভাব পড়তে চলেছে বুঝেই এই পদক্ষেপ বলে অভিযোগ।

সমবায় বাঁচাও মঞ্চের তরফে আরও জানানো হয়, তাঁরা লোকসভা ভোটের আগেই মানুষের কাছে যাবেন। সমবায়ের ভোটারদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে তুলে ধরবেন কী ভাবে অন্যায় পন্থা অবলম্বন করে প্রশাসনকে ব্যবহার করে তৃণমূল এই ভোট আটকে দিল। যেখানে প্রশাসন, প্রার্থী এবং ভোটারদের তরফে সব প্রস্তুতি সারা হয়ে গিয়েছিল। সেই সব খরচ হওয়া অর্থ জলে চলে গেল। কার স্বার্থ রক্ষা করতে এই সিদ্ধান্ত তার জবাব দিতে হবে তৃণমূলকে।

তবে সমবায় বাঁচাও মঞ্চের তরফে আরও জানানো হয়েছে, যে ভাবে হাইকোর্ট থেকে নির্দেশ এনে ভোট আদায় করা হয়েছিল, প্রয়োজনে আবার হাইকোর্টের দরজায় কড়া নাড়া হবে। সাধারণ গরীব খেটে খাওয়া মানুষের কষ্টের টাকা তৃণমূলকে কোনও ভাবেই লুঠে খেতে দেওয়া হবে না।


Share with Friends

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *