মহারাষ্ট্র নামটা শুনলেই যে বেড়াতে যাওয়ার জায়গাগুলো মাথায় আসে তার মধ্যে অন্যতম হল ইলোরা (Elora)। ঔরঙ্গাবাদ শহর থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত ইলোরা (Elora)। ভারতের একটি অন্যতম প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন। যাকে ১৯৮৩-তে ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইটের তালিকাভুক্ত করেছে।
আপনাদের অনেকেরই ইলোরা গুহা ঘুরতে যাওয়ার অভিজ্ঞতা রয়েছে। এবার যদি আপনাদের বলি যে এই ইলোরা গুহার নামেই একটি শহর আছে সুদূর কানাডায় (Canada)! কি শুনে অবাক হচ্ছেন তাই তো? আরে দাঁড়ান দাঁড়ান… অবাক হওয়ার তো আরও বাকি আছে! আগে পুরো গল্পটা বলি আপনাদের… প্রথম যখন এই তথ্যটা জানলাম তখন আমিও বেশ অবাক হয়েছিলাম বৈকি! তারপর গুগল আর উইকিপিডিয়ার দৌলতে এর রহস্যভেদ হল।
কানাডার অন্টারিও প্রভিন্সের দক্ষিণে ছোট্ট এই টাউনটি টরন্টো শহর থেকে ১২০ কিলোমিটারে মধ্যে। প্রায় ৮ হাজার জনসংখ্যার এই এলাকাটি জুড়ে আজও রয়েছে ১৯ শতকের আমেজ। ১৮৩২ সালে ভারত ফেরত এক ব্রিটিশ অফিসার ক্যাপ্টেন উইলিয়াম গিলকিসন হলেন এই ইলোরা টাউনশিপটির প্রতিষ্ঠাতা। গ্র্যান্ড রিভারের পাশে নিকোল টাউনশিপে ১৪ হাজার একর জমি কিনে তিনি থাকতে শুরু করেন।
গিলকিসনের ভাইয়ের জাহাজের নাম ছিল ইলোরা। আসলে সেই সাহেব ইলোরা গুহা ঘুরে মহা খুশি হন। তাই নিজের জাহাজের নামই রেখে ফেলেন ইলোরার নামে। আর এদিকে ভাইয়ের সেই জাহাজের নামটি গিলকিসনের এত পছন্দ হয় যে তিনি তাঁর সাধের টাউনটির নামকরণ করেন ইলোরা।
ইলোরার অন্যতম আকর্ষণ হল প্রায় ১৯০ বছর আগে ১৮৩২ সালে তৈরি হওয়া ইলোরা মিল। সে দিনের সেই মিলটিই বর্তমানে ইলোরা মিল ইন অ্যান্ড স্পা। এখানে এখন রাতে থাকার ব্যবস্থা যেমন আছে তেমনই আছে সুসজ্জিত রেস্তোরাঁও। ২০২০-র ফেব্রুয়ারি নাগাদ এই বিল্ডিংটিকে হেরিটেজ সেন্টার ওয়েলিংটনের তরফে “হেরিটেজ রেকগনিশন” পুরষ্কার দেওয়া হয়। এছাড়াও এখানে বিভিন্ন কনভেনশন এরিয়া, পার্ক থেকে শুরু করে রিভার-টিউবিং, জিপ লাইনিংয়ের ব্যবস্থা আছে। আছে শপিং এবং পেটপুজোর জন্য ঢালাও দোকানপাট, পাব আর রেস্তোরাঁ। এছাড়া আছে খুব মিষ্টি ছোট্ট একটা ডাউনটাউন যেটা খুব সহজেই পায়ে হেঁটে ঘুরে ফেলা যায়।
আরও পড়ুন: হজ-টিকা-ধর্মবিশ্বাস-বিজ্ঞান নিয়ে কী লিখলেন দেখুন তসলিমা নাসরিন
তবে ইলোরা ঘুরতে এলে হাতে অন্তত দুটো দিন সময় নিয়ে এলে ভাল হল। কারণ এখানে এত কিছু দেখার আছে যে পুরোটা এক দিনে ঘুরে শেষ করা সম্ভব নয়। আমাদের ইলোরা ঘুরে দেখার জন্য হাতে মাত্র মাত্র আধটা দিন ছিল। তার মধ্যে যতটা সম্ভব ঘোরার চেষ্টা করেছি। তারই কিছু ছবি রইল আপনাদের জন্য।
লেখিকা- কানাডাবাসী সাংবাদিক।
ছবি: অনর্ঘ ঘোড়াই।