শ্যামসুন্দর দোলই, দাসপুর: পশ্চিম মেদিনীপুরের (Paschim Medinipur) দাসপুরের (Daspur) বাসুদেবপুরে (Basudevpur) শুরু হয়েছে ঐতিহ্যবাহী শ্মশানকালী পুজো (Kali Pujo)। এই গ্রাম এবং আসপাশের কয়েক হাজার মানুষ উৎসবের মেজাজে চলা ৩ দিনের এই পুজোয় অংশ নিয়েছেন। সোমবার থেকে শুরু হয়েছে পুজো। গত ২ বছর অনাড়ম্বরে পুজো সারা হলেও এই বছর তা বড় করে আয়োজন করা হয়েছে।
দাসপুর এলাকায় বাসুদেবপুর গ্রাম শিক্ষা দীক্ষায় অগ্রণী একটি পীঠস্থান। আদি কবি কৃত্তিবাস ও মহাকবি রায় গুনাকর ভারতচন্দ্রের জ্ঞাতিকূল ও পন্ডিত ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের পদধুলিতে গরিমান্বিত এই গ্রাম। এখানে ১২৪০ বঙ্গাব্দে কলেরা মহামারীর প্রকোপ থেকে বাঁচতে এই পুজোর আয়োজন করা হয়। এই পুজোর শুরু হয় তৎকালীন ন্যায়ভূষণের হাত ধরে।
নামে শ্মশানকালী হলেও এই পুজো চলে দিনের বেলাতে। প্রতিবছর শ্মশানকালীর মূর্তি নির্মাণ করে পুজোর অনুষ্ঠান চলে ৩ দিন ব্যাপী। এখান থেকেই এই পুজো দাসপুর এলাকার সেকেন্দারি, রসিকগঞ্জ, লাউদা, ঢোল তথা রাজনগর পশ্চিমে শুরু হয়েছে।
গত দু’বছর করোনা অতিমারীর জন্য অন্য বারের মতো ধুমধাম করে পুজো এবং অনুষ্ঠান করা যায়নি। তবে এবছর ফের স্বমহিমায় সাড়ম্বরে পুজোর অনুষ্ঠানে মেতেছেন এলাকার মানুষ। মানত পূরণে চলেছে দণ্ডী কাটা থেকে শতাধিক ছাগ বলিও। সম্পাদক আনন্দমোহন খান ও কানাই লাল দের সভাপতিত্বে বারোয়ারী কমিটির পরিচালনায় এই অনুষ্ঠান সম্পূর্ণ মাত্রা পেয়েছে।
এটি ফলহারিনী কালীকা চতুর্দশীর পরবর্তী কালী পুজো। তাই মরসুমি ফল আম, জাম, কাঁঠলাদি-সহ সাধকের কর্মফল মায়ের উদ্দেশে অর্পণ করায় রীতি রয়েছে। তাও কী ভাবে পশু বলির মতো প্রথা চালু রয়েছে তা নিয়ে অনেকেই বিস্ময় প্রকাশ করেন। তবে সমাজের কিছু গণ্যমান্য ব্যক্তির মতে নিষ্ঠুর এই বলি প্রথার অবসান ঘটাতে পারলে এই পূজার মাহাত্ম্য ও নান্দনিকতা আরও বাড়বে।