ঘাটালের বন্যা দুর্গতদের পাশে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ডিউস, পৌঁছে দিল পানীয় জল, খাবার

Share with Friends

নিজস্ব সংবাদদাতা, ঘাটাল: ঘাটাল (Ghatal) মহকুমায় বন্যা (Flood) এখন প্রতিবছরের নিয়মিত ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রায় প্রতি বছরই বন্যায় হাজার হাজার মানুষের প্রাণ ওষ্ঠাগত হওয়ার অবস্থা তৈরি হয়। এবারেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। গত কয়েক দিনের প্রবল বৃষ্টিতে শিলাবতী নদীর জলে প্লাবিত ঘাটাল মহকুমার ঘাটাল, দাসপুর, কেশপুর ব্লক এবং ঘাটাল শহর। এবার বন্যা কবলিত সেই মানুষের পাশে দাঁড়াতে ত্রাণ নিয়ে দুর্গত এলাকায় পৌঁছে গেল স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা Daspur Euphoric Welfare Society (DEWS)।

মঙ্গলবার ডিউসের সদস্যরা ঘাটালের রাজনগর পশ্চিম দিগার পাড়ায় নৌকা নিয়ে প্রায় ২০০টি পরিবারের হাতে ত্রাণ তুলে দেন। ত্রাণ সামগ্রীর মধ্যে ছিল শুকনো খাবার, ORS, বোতলবন্দি পানীয় জল, মশা তাড়ানোর কয়েল, দেশলাই-সহ আরও কিছু অতি প্রয়োজনীয় সামগ্রী। ডিউসের সদস্যদের সঙ্গে হাত লাগান বন্য কবলিত এলাকার স্থানীয় বাসিন্দারাও।

ত্রাণ পেয়ে এলাকাবাসীরা সবাই সমায়িক ভাবে স্বস্তি পেয়েছেন। তাঁরা ডিউসের সদস্যদের এভাবে পাশে থাকার জন্য ধন্যবাদ জানিয়েছেন। সেই সঙ্গে ভবিষ্যতেও যাতে তাঁরা পাশে থাকেন সেই আবদেন করেছেন। ত্রাণ বিলির সময় বন্যা দুর্গতরা ফি বছরের তাঁদের অসহায়তার কথা বলতে গিয়ে ডিউসের সদস্যদের কাছে কেঁদে ফেলেন। তাঁরা চান তাঁদের এই বিপদের সময় সবাই যেন একটু পাশে দাঁড়ান

ডিউসের সম্পাদক তথা রামকৃষ্ণ মণ্ডল ইন্সটিটিউট অব এডুকেশনের টিচার ইন চার্জ অধ্যাপক ডক্টর সুমন্তকুমার খাঁড়া বলেন, “টিভিতে মানুষে অসহায় অবস্থা দেখে আর বাড়িতে বসে থাকতে পারলাম না। তাই ত্রাণ নিয়ে বন্যা দুর্গতদের পাশে দাঁড়াতে এসেছি। আর এখানে এসে যা দেখেছি তাতে চোখে জল চলে গেল। চাষের জমি রাস্তা পুকুর সব জলের তলায়। যোগাযোগ ব্যবস্থা সম্পূর্ণ বিপর্যস্ত। এক একটি পাড়া যেন বিচ্ছিন্ন দ্বীপের মত জেগে রয়েছে‌। অনেক একতলা বাড়ি সম্পূর্ণ জলের তলায়। মাটির বাড়িগুলো ভেঙে পড়েছে। বাড়ির ছাদে মানুষের সঙ্গেই তুলে নেওয়া হয়েছে গবাদি পশুদের। মাথার ওপর একটা ত্রিপল নিয়ে কোনও রকমে বাঁচা। গোটা এলাকায় স্বাভাবিক ভাবে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন। জলের তলায় সব টিউবওয়েল। ফলে একটু পানীয় জলের জন্য হাহাকার। কেউ কেউ শোনালেন তাঁরা নাকি এক সময় এই বন্যাজল ফুটিয়ে খেয়ে তৃষ্ণা নিবারণ করেছেন। অসুস্থ হলেও ওষুধ কিনতে যাওয়ার অবস্থাটুকু নেই।”

সুমন্ত আবেদন করেছেন, সবাই এই দুর্গত মানুষগুলির পাশে দাঁড়ান। নিজেদের মতো করেই সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিন। আর তা যদি সম্ভব না হয় তবে বাড়িতে বসে ডিউসের মাধ্যমে সাহায্য পৌঁছে দিতে পারেন। তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য ফোন নম্বরও ইমেল আইডিও দিয়েছেন সুমন্ত।

‘দিদি’ প্রধানমন্ত্রী না হলে ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান বাস্তবায়িত হবে না, দাবি দেবের, পাল্টা জবাব বিজেপির

রাজনগর ইউনিয়ন হাই স্কুলের শিক্ষক তথা ডিউসের সদস্য রামকৃষ্ণ দত্ত বলেন, “মানুষের এই বিপদের দিনে ঘরে বসে থাকা সম্ভব নয়। টিভিতে আপনারা ঘাটাল শহর বা তার আশপাশের বন্যার ছবি দেখেছেন। কিন্তু এই মহকুমার প্রান্তিক জায়গাগুলির অবস্থা আরও খারাপ। অনেক জায়গায় কোনও ত্রাণও হয়তো এখনও পৌঁছয়নি। বন্যার জল ফুটিয়ে তাঁরা খেয়ে বেঁচে থাকার লড়াই চালাচ্ছেন। তাদের কথা কেউ জানেনও না। আমারা আমাদের সাধ্য মতো বন্যা দুর্গতদের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছি, ভবিষ্যতেও করব। সবাই যদি একটু করে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন তবে অসহায় মানুষগুলির দুর্গতি কিছুটা হলেও কমবে।”

প্রতি বছর বন্যা এলে ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান নিয়ে অভিযোগ পাল্টা অভিযোগ শুরু হয়। রাজ্যের শাসক দল কেন্দ্রের ঘাড়ে দোষ চাপায়। আর কেন্দ্রের শাসক দলের প্রতিনিধিরা রাজ্যের ঘাড়ে। এবারও তাই শুরু হয়েছে। কিন্তু ঘাটালের বন্যা পরিস্থিতি বিগত কয়েক দশক ধরে যেমন ছিল তেমনই রয়ে গিয়েছে। প্রতি বছর বন্যার সময় ত্রাণের জন্য জলের জন্য হাহাকার করতে হয় অসহায় মানুষগুলিকে। এখানে ডিউসের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন ( 8001004642 / 9932599132/ Email: [email protected]/ Facebook: https://www.facebook.com/groups/500969097819610/)।


Share with Friends

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *