নিজস্ব প্রতিবেদন: রাসায়নিক দ্রব্যের ব্যবহার আমাদের জীবনে ঢুকে পড়ার আগে মানুষ অনেক ক্ষেত্রেই প্রাকৃতিক উপায়ে নিজেদের পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন বা সুস্থ রাখতেন। করোনাকালের শুরুতে যে স্যানিটাইজারের (Sanitizer) জন্য হাহাকার পড়ে গিয়েছিল তাও নাকি প্রকৃতির কোলে উপস্থিত রয়েছে। উত্তরবঙ্গের কিছু এলাকার মানুষ এমনই এক গাছকে (Artemisia plant) এমন স্যানিটাইজার রূপে ব্যবহার করেন।
করোনার প্রকোপ শুরুর বহু আগে এমনকি হয়তো প্রাচীন কাল থেকেই উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন গ্রামের মানুষ ‘টিতেপাতি’ নামের একটি গাছকে জীবাণুনাশক এবং কীটপতঙ্গ তাড়াতে ব্যবাহার করে আসছেন। এই গাছের ইংরেজি নাম আর্টেমেসিয়া। আসলে আর্টেমেসিয়া একটি গোত্র। এই গোত্রের মধ্যে প্রায় ৪০০ প্রজাতির গাছ রয়েছে।
আরও পড়ুন: লিচু চাষের খুঁটিনাটি – জমি, চারা তৈরি, চারা রোপণ, পরিচর্যা
উত্তরবঙ্গের টিতেপাতি গাছের পাতা জলে ভিজিয়ে শরীরে বা বাড়িতে ছিটিয়ে দেন জীবাণুনাশক হিসাবে। তাঁদের বিশ্বাস অন্য কোনও রাসায়নিক পদার্থ এমনকি স্যানিটাইজার পর্যন্ত লাগবে না। এই টিতেপাতি গাছের পাতার জলই সে কাজ করে দেবে।
এমনকি প্রথা মেনে এই অঞ্চলের মানুষ শ্মশান থেকে ফিরে ঘরে ঢোকার আগে এই গাছের জল গায়ে ছড়িয়ে নেন জীবাণুনাশক হিসাবে। এতে কোনও রকম সংক্রমণ হবে না বলে তাঁদের বিশ্বাস। এ ছাড়া বাড়ি আশেপাশেও এই গাছের জল দিয়ে ছিটিয়ে দেওয়া হয়। যাতে কোনও পোকামাকড় ঘরে না ঢোকে না বলে দাবি তাঁদের। আসলে এই গাছের পাতার তীব্র গন্ধ এবং তেতো স্বাদই এর মূল কারণ।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই রয়েছে টারপেনয়েডস এবং সেসকুইটারপেনে ল্যাকটোনস নামের রাসায়নিক রয়েছে। যার ফলে পোকামাকড় বা পশুরা এই গাছ খুব একটা খায় না। এর বীজ হাওয়ার মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। তবে এই প্রজারির অন্য গাছ খাদ্য হিসাবে ব্যবহার হয়। তবে এই গাছ সত্যিই স্যানিটাইজারের বিকল্প হিসাবে দেখা উচিত কিনা তা নিয়ে বিশেষজ্ঞরা নির্দিষ্ট করে কিছু জানাননি। করোনাকালে পরে হয়তো এ সম্পর্কে আরও বিস্তারিত জানা যাবে।