শ্যামসুন্দর দোলই, দাসপুর: ভারতের মতো কৃষি প্রধান দেশের ৭০ শতাংশ মানুষ কষিজীবী, জিডিপি-র প্রায় ২০ শতাংশ আসে কৃষি থেকে। অথচ দেশের কৃষকদের শোষণ ও অবহেলা এখনও বাস্তব। এই অভিযোগ তুলে প্রতিবাদ শুরু করেছে রাজ্যের শাসক দল। সোমবার কেন্দ্রীয় সরকারের কৃষি ও কৃষক স্বার্থ বিরোধী আইন বাতিল করিয়ে জনমত ও ঐক্য অটুট রাখতে পশ্চিম মেদিনীপুরের দাসপুর সবুজ সংঘের মাঠে এক ঐতিহাসিক জনসভা হল। প্রতিবাদ সভার আয়োজন করে ঘাটাল সাংগঠনিক জেলা কিষাণ ক্ষেত মজদুর তৃণমূল কংগ্রেস।
এই সভায় রাজ্যের ৪ মন্ত্রী-সহ ছিলেন একাধিক বিধায়ক এবং তৃণমূলের রাজ্য ও জেলা স্তরের নেতারাও। ছিলেন রাজ্যের সেচ জলসম্পদ অনুসন্ধান ও উন্নয়ন মন্ত্রী মানসরঞ্জন ভুঁইয়া, ক্ষুদ্র কুটির শিল্প ও বস্ত্র প্রতিমন্ত্রী শ্রীকান্ত মাহাতো, গ্রামপঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী প্রতিমন্ত্রী শিউলি সাহা, কৃষি মন্ত্রী বেচারাম মান্না, প্রাক্তন কৃষি ও শ্রমিক দফতরের মন্ত্রী এবং বর্তমান কিষাণ ক্ষেত মজদুর তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সভাপতি পূর্ণেন্দু বসু।
এছাড়াও ছিলেন দাসপুরের বিধায়ক মমতা ভূঁইয়া, ঘাটালের প্রাক্তন বিধায়ক শঙ্কর দোলই, জেলা জনস্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ শ্যামপদ পাত্র, ঘাটাল সাংগঠনিক জেলা কিষাণ ক্ষেত মজদুর তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি সুনীল ভৌমিক, দাসপুর ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি সুকুমার পাত্র, বিধায়ক অরূপ ধাড়া, বিধায়ক দীনেন রায় ও ঘাটাল সাংগঠনিক জেলা সভাপতি আশিস হুদাইত প্রমুখ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনার দায়িত্বে ছিলেন শিক্ষক নেতা সুজিত বন্ধ্যোপাধ্যায়।
বিপুল এই জমায়েতে তৃণমূল নেতৃত্ব জনপরিষেবায় সব মানুষের কল্যাণে অর্ধশতাধিক সামাজিক প্রকল্পের রূপকার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেশের প্রধানমন্ত্রীর গুরুদায়িত্বে পৌঁছে দেওয়ার জন্য দেশের অন্নদাতাদের সমর্থন ও ঐক্য অটুট রাখার আবেদন জানিয়েছেন।
বেচারাম মান্না দেশের অন্নদাতাদের শোষণ ও সর্বনাশ করে কর্পোরেট সংস্থার পুঁজির বিকাশ ঘটানোর উন্মত্ততায় কেন্দ্রীয় সরকারকে তীব্র আক্রমণ করেন। তিনি বলেন, “প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি মতো, বিদেশ থেকে কালো টাকা উদ্ধার হয়নি, প্রতি বছর ২ কোটি বেকারকে চাকরি হয়নি। সীমান্তে উত্তেজনা কমেনি। জঙ্গিদের দমন হয়নি। কৃষকদের প্রতি বছর ৬ হাজার টাকা কৃষক সম্মানিধি দেওয়া হয়নি। বরং কৃষকদের ন্যায্য অধিকার রক্ষার আন্দোলন দমনে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীপুত্রের গাড়ির চাকায় পিষে হত্যা করা হয়েছে কৃষকদের, এমন নজির তৈরি করেছে বিজেপি।” এ ভাবে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া একের পর এক প্রতিশ্রুতির তালিকা তুলে ধরে তিনি আরও বলেন, “মিথ্যে কথা বলায় যদি নোবেল পুরস্কার থাকতো তাহলে সেটি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিই পেতেন। তাই তাঁর এই সব ধোঁকাবাজি রুখতে পারেন দেশের অন্নদাতা কৃষকরাই। এর দৃষ্টান্ত আমাদের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমর্থিত দিল্লির বুকে কৃষক নেতা টিকায়েতের নেতৃত্বে বছরব্যাপী অহিংস আন্দোলন ও জয়লাভ।”
বেচারাম মান্না আরও জানান, করোনা অতিমারীকালেও কৃষকদের ঐকান্তিক পরিশ্রমে কৃষিতে দেশের মধ্যে এই বাংলা লাগাতার ভাবে প্রথম স্থানে রয়েছে। কন্যাশ্রীর মতো সামাজিক প্রকল্পে এই বাংলা বিশ্বসেরা শিরোপা জয়ী। এ ভাবে খাদ্য সাথী, স্বাস্থ্য সাথী প্রভৃতি একগুচ্ছ সামাজিক প্রকল্পের রূপায়ণে এই বাংলা দেশের মধ্যে প্রথম স্থানে রয়েছে। এই সব কর্মকাণ্ডের রূপকার জননেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমাদের সঙ্গেই রয়েছেন। আমাদেরও কর্তব্য তাঁর সঙ্গে থাকা। তাহলে আমরা উন্নয়ন কর্মযজ্ঞে আরও এগিয়ে যাবো।