প্রবীর মুখোপাধ্যায়: জৈব কৃষির বিকাশের ফলে এখন উত্তর ২৪ পরগনার গ্রামীণ জীবনের স্বনির্ভর হওয়া থেকে শুরু করে কর্মসংস্থানের নতুন দরজা খুলে যাচ্ছে। বর্তমানে গ্রামীণ শিক্ষিত তরুণ-তরুণীরা গ্রামেই তাঁদের নিজস্ব জমিতে নতুন প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে বিভিন্ন ফসলের (Vegetable cultivation) চাষ শুরু করেছেন। এই চাষের ক্ষেত্রে সহয়োগিতা পাওয়া যাচ্ছে ইন্টারনেটেও। বিদেশি প্রযুক্তিকে (New Technology) কাজে লাগিয়ে এই চাষের তত্পরতা এখন তুঙ্গে। উত্পাদিত ফসল ফড়ে বা মদ্যস্থতাকারীদের সাহায্য ছাড়াই সরাসরি শহরে ইন্টারনেটের মাধ্যমে হোম ডেলিবারিও শুরু করেছেন গ্রামীণ উত্সাহী ও শিক্ষিত তরুণ তরুণীরা। এর ফলে আর্থিক ভাবে স্বচ্ছল হয়ে উঠেছেন একটা বড় অংশের কৃষক পরিাবর।
প্রগতিশীল চাষিরা কৃষকের শিক্ষিত ছেলে মেয়েদের নতন এই পথ দেখিয়ে স্বনির্ভর হওয়ার সুযোগ তৈরি করে দিচ্ছেন। উত্তর ২৪ পরগনা জেলার দেগঙ্গা, বাগদা, বসিরহাট, স্বরূপনগর, বাদুড়িয়া-সহ বিভিন্ন এলাকায় নয়া প্রযুক্তির ব্যবহারে সবজি চাষের প্রচেষ্টা চলছে। এই উদ্যোগের ফলে গ্রামীণ কর্মসংস্থানের নিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।
প্রধানত কৃষি এবং দেশ দুনিয়ার অন্য খবরের জন্য আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে যোগ দিন এখানে ক্লিক করে / আমাদের ফেসবুক পেজ
চাকরি সন্ধান করে হয়রান হচ্ছেন ওই অঞ্চলের অনেক বেকার তরুণ তরুণী। স্বনির্ভর হওয়ার লক্ষ্যে নয়া প্রযুক্তির ব্যবহার করে সবজি চাষে নেমে পড়েছেন অনেকেই। কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ফেলে দেওয়া নারকেলের শুকনো কুড়ো দিয়ে বীজতলা তৈরি করার উদ্যোগ গ্রহণ করেন এ চাষে যুক্ত ব্যক্তিরা। ছোট ছোট ১০০-২০০ মিলিলিটারের প্লাস্টিক গ্লাসের অর্ধেকটা নারকেল কুড়ো দিয়ে বসিয়ে দেওয়া হয় লাউ, চাল কুমড়ো, মিষ্টি কুমড়ো ও শসার শোধন করা বীজ। তার উপর আবার নারকেল কুড়ো দেওয়া হয়। ২-৩ দিনের মধ্যে প্লাস্টিকেরগ্লাসে ছোট চোট চারাগাছ তৈরি হয়ে যাবে। এরপর সন্ধ্যার সময় একবার করে জল স্প্রে করতে হবে। এই সমস্ত ফসলের ছোট চারা তৈরি করতে এক সময় প্রচুর বীজ নষ্ট হয়ে যেত। এখন এই পদ্ধতিতে তা আর হয় না। এর আগে বীজ ছড়ালে অতিরিক্ত গরম, অতি বর্ষায় এবং যে কোনও প্রাকৃতিক দুর্যোগে বীজ নষ্ট হয়ে যেত। এখন অতি সহজ পদ্ধতিতে বীজ একেবারেই নষ্ট হ্চছে না। এমনকি বীজতলা রক্ষা করা সম্ভব হচ্ছে। আবার এক সপ্তাহের মধ্য়ে বীজতলা বড় হয়ে যাচ্ছে।
আমনধানে শামুক কাঁকড়া এবং ইঁদুর নিয়ন্ত্রণ করবেন কী ভাবে
কৃষি বিশেষজ্ঞরাজানিয়েছএন, বীজতলা তৈরি হচ্ছে বিজ্ঞানসম্মত পদ্ধতি মেনে। ফলে লাউ, চাল কুমড়ো, মিষ্টি কুমড়ো-সহ বিভিন্ন সবজি বীজ সুস্থ ও সতেজ ভাবে। আবার নারকেলের কুড়োতে বাতাস ভাল চলাচল করতে পারে। জেলার কৃষি বিশেষজ্ঞরা আরও জানিয়েছেন, মাঠে ভাটি তৈরি করে ১৪০ মাইক্রন প্লাস্টিক দিয়ে ঢেকে দেওয়া হচ্ছে। এবার প্লাস্টিকে ফুটো করে প্লাস্টিকের গ্লাস কেটে বীজতলা বের করে নারকেলের কুড়ো সমেত বসিয়ে দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। এক্ষেত্রে হালকা সেচ দেওয়া জরুলি।
মাইক্রোপট পদ্ধতিতে হাইব্রিড সূর্যমুখীর চাষ
এক মাসের মধ্যে গাছ বড় হয়ে মাচায় উঠে যাচ্ছে। বসিরহাটের স্থানীয় ও অভিজ্ঞ কৃষিজীবীরা জানিয়েছেন, প্লাস্টিকে ঢাকা থাকলে জৈব উপাদানগুলি বৃষ্টিতে ধুয়ে যাওয়ার আশঙ্কা একেবারেই থাকে না। আবার রোদের তাপেও প্লাস্টিকের নীজের অংশ ঠান্ডা থাকে। এর ফলে চারাগাছ দ্রুত বৃদ্ধি পায়। জল নিকাশির জ্ন্য প্রতিটি বাটির পাশে নালা রাখা জরুলি।
প্রধানত কৃষি এবং দেশ দুনিয়ার অন্য খবরের জন্য আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে যোগ দিন এখানে ক্লিক করে / আমাদের ফেসবুক পেজ
নয়া প্রযুক্তির ব্যবহার করে সবজি চাষের ফলে বনগা, বাগদা, দেহঙ্গা, বাদুড়িয়া স্বরূপনগরের সবজি চাষিরা অনেকেই ভাল মুনাফা অর্জন করছেন। পাশাপাশি গ্রামীণ শিক্ষিত তরুন তরুণীরা এই চাষকে কেন্দ্র করে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বীও হয়ে উঠছেন। আধুনিক পদ্ধতির সবজি চাষে উসাহীরা স্থানীয় বিডিও অফিস, পঞ্চায়েত দফতর ও কৃষি বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ পাচ্ছেন। আবার উত্পাদিত সবজি স্থানীয় বাজারহাট ও শহরাঞ্চলেও বিক্রির বাজার পাচ্ছেন সবজি চাষিরা। চড়া দামে সবজি বিক্রি হওয়ায় লাভও বাড়চে সবজি চাষিদের।
সৌজন্যে: বর্তমান